মার্কণ্ডেয় উবাচ

মহর্ষি মার্কণ্ডেয় ব্রহ্মাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,

ওঁ যদ্ গুহ্যং পরমং লোকে সর্বরক্ষাকরং নৃণাম্ । 
যন্ন কস্যচিদাখ্যাতং তন্মে ব্রুহি পিতামহ ॥ ১

 – হে ব্ৰহ্মন্ ! জগতে যাহা অতি গোপনীয় ও মানবের দুঃখনিবারক এবং যাহা কাহারও কর্তৃক অভিহিত হয় নাই, তাহা আমাকে উপদেশ করুন ॥ ১

ব্রহ্মোবাচ

অস্তি গুহ্যতমং বিপ্র সর্ব্বভূতোপকারকম্ 
দেব্যাস্ত কবচং পুণ্যং তচ্ছৃণুম্ব মহামুনে ৷৷ ২ 

 ব্রহ্মা মার্কণ্ডেয়ের আগ্রহাতিশয্যে আনন্দিত হইয়া তাঁহাকে বলিলেন, হে মহামুনে! মানবগণের দুঃখনিবারক পুণ্যপ্রদ দেবীকবচ জগতে অতি গোপনীয়; অধুনা আমি তাহা কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর ॥ ২॥ [ মহামায়া জগতে নানাবিধ মূৰ্ত্তিতে নববিধ নামে পূজিত হইয়া থাকেন ; ব্রহ্মা প্রথমেই মূর্তিসমূহের নাম কীর্তন করিতেছেন ; - }

প্রথমং শৈলপুত্রীতি দ্বিতীয়ং ব্রহ্মচারিণী । 
তৃতীয়ং চণ্ডঘণ্টেতি কুষ্মাণ্ডেতি চতুৰ্থকম্ ॥ ৩ 

পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি ষষ্ঠং কাত্যায়নী তথা ।
সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমম্ ॥ ৪

নবমং সিদ্ধিদাত্রীতি নবদুর্গাঃ প্রকীৰ্ত্তিতাঃ। 
উক্তান্যেতানি নামানি ব্ৰহ্মণৈব মহাত্মনা ॥ ৫

মহাত্মা ব্রহ্মা বেদে দেবীরযে নামসমূহ কীৰ্ত্তন করিয়াছিলেন, তাহা এই—১ম “শৈলপুত্রী” ; ২য় “ব্রহ্মচারিণী” ; ৩য় “চন্দ্রঘণ্টা” ; ৪র্থ “কুষ্মাণ্ডা” ; ৫ম “স্কন্দমাত৷” ৬ষ্ঠ “কাত্যায়নী” ; ৭ম “কালরাত্রী” ; ৮ম “মহাগৌরী” ; ১ম "সিদ্ধিদাত্রী”; এই নবনামেই জগদ্ধাত্রী দুর্গা বেদাদিশাস্ত্রে অভিহিত হইয়াছেন ৷ ৩ - ৫ ॥ 

অগ্নিনা দহ্যমানাস্তু শত্রুমধ্যগতা রণে । 
বিষমে দুর্গমে চৈব ভয়ার্ত্তাঃ শরণং গতাঃ ॥ ৬ 

ন তেষাং জায়তে কিঞ্চিদশুভং রণসঙ্কটে । 
আপদং ন চ পশ্যন্তি শোকদুঃখভয়ঙ্করীম্। 
যৈস্ত ভক্ত্যা স্মৃতা নিত্যং তেষামৃদ্ধিঃ প্রজায়তে ৷ ৭ 

যাহারা অগ্নিদগ্ধ ও রণে শত্রুপীড়িত হইয়া দেবীর শরণাপন্ন হয়, আর যাহারা বিষম সঙ্কটে ভয় পীড়িত হইয়া দেবীর শরণাপন্ন হয়, তাহাদের যুদ্ধে বা সঙ্কটে কিছুমাত্র অশুভ উপস্থিত হয় না এবং তাহাদের দুঃখ-শোকজড়িত বিপদও ঘটে না, যাহারা ভক্তিপূর্ব্বক দেবীর স্মরণ করে, তাহাদের ঐশ্বর্য্য'দি বৃদ্ধি প্ৰাপ্ত হয় ॥ ৬-৭ ॥

প্রেতসংস্থা চ চামুণ্ডা বারাহী মহিষাসনা । 
ঐন্দ্রী গজসমারূঢ়া বৈষ্ণবী গরুড়াসনা ॥ ৮

নারসিংহী মহাবীর্য্যা শিবদূতী মহাবলা ।
মাহেশ্বরী বৃষরূঢ়া কৌমারী শিখিবাহনা ॥ ৯

ব্রাহ্মী হংস-সমারূঢ়া সর্বাভরণভূষিতা ।
লক্ষ্মীঃ পদ্মাসনা দেবী পদ্মহস্তা হরিপ্রিয়া ॥ ১০

শ্বেতরূপধরা দেবী ঈশ্বরী বৃষবাহনা । 
ইত্যেতা মাতরঃ সর্বাঃ সৰ্ব্বযোগ-সমন্বিতাঃ ॥ ১১
 
নানাভরণ-শোভাঢ্যা নানারত্নোপশোভিতাঃ । 
শ্রেষ্ঠেশ্চ মৌক্তিকৈঃ সর্ব্বা দিব্যহার প্রলম্বিভিঃ ॥ ১২
 
ইন্দ্রনীলৈৰ্ম্মহানীলৈঃ পদ্মরাগৈঃ সুশোভনৈঃ । 
দৃশ্যন্তে রথমারূঢ়া দেব্যঃ ক্রোধসমাকুলাঃ ॥ ১৩ 

প্রেতবাহনা চামুণ্ডা, মহিষবাহন। বারাহী, গজারূঢ়া ঐন্দ্রী, গরুড়বাহনা বৈষ্ণবী, মহাবীর্য্যা, নারসিংহী, শক্তিশালিনী শিবদূতী, বৃষারূঢ়া মাহেশ্বরী, ময়ূরবাহনা কৌমারী, হংসারূঢ়া সর্ব্বা ভরণ ভূষিতা ব্রাহ্মী, পদ্মহস্তা পদ্মাসনা হরিপ্রিয়া, শ্বেতবর্ণা বৃষবাহনা ঈশ্বরী, সৰ্ব্বকৰ্ম্মসুনিপণ! এই মাতৃগণ বিবিধভূষণে নানাবিধ রত্নে দিব্যহার গ্রথিত সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ মুক্তাফলকে সুশোভন পদ্মরাগ, মহানীল ও ইন্দ্রনীলে সুশোভিত হইয়া রথারূঢ়া হইয়াছেন; তাঁহাদের বদনমণ্ডলে ক্রোধ পরি লক্ষিত হইতেছে ॥৮-১৩

শঙ্খং চক্রং গদাং শক্তিং হলঞ্চ মুসলায়ুধম্‌ 
খেটকং তোমরঞ্চৈব পরশুং পাশমেব চ ॥ ১৪

কুন্তায়ুধঞ্চ খড়্গ গঞ্চ শাঙ্গায়ুধমনুত্তমম্ ।
দৈত্যানাং দেহনাশায় ভক্তানামভয়ায় চ।
ধারয়ন্ত্যায়ুধানীখং দেবানাঞ্চ হিতায় বৈ ॥ ১৫ 

তাঁহারা দৈত্যগণের নাশের জন্য ও ভক্তগণের অভয়ের জন্য এবং দৈত্যপীড়িত দেবগণের মঙ্গলের নিমিত্ত শঙ্খ, চক্র, গদ', শক্তি, হল, মুসল, থেটক, তোমর, পরশু, পাশ, কুন্ত, খড়গ ও সর্ব্বোৎকৃষ্ট ধনুঃ ধারণ করিয়াছেন ॥ ১৪ - ১৫ ||

নমস্তেহস্ত মহারৌদ্রে মহাঘোরপরাক্রমে । 
মহাবলে মহোৎসাহে মহাভয়-বিনাশিনি । 
ত্রাহি মাং দেবী দুষ্প্রেক্ষ্যে শত্রুণাং ভয়বদ্ধিনি ৷৷ ১৬

 হে মহারুদ্রশক্তিরূপিণি ! মহাপরাক্রমশালিনি ! মহাসত্ত্বময়ে ! দেবি! তুমি মহাবলধারিণী, তোমার রূপ সুদুর্দশ ; তুমি শত্রুগণের ভর বর্দ্ধন ও ( ভক্তগণের) মহাভয় দূর করিয়া থাক; ( অতএব ) তোমাকে নমস্কার করি ॥ ১৬ ॥ 

প্রাচ্যাং রক্ষতু মামৈন্ত্রী আগ্নেয্যামগ্নিদেবতা। 
দক্ষিণে চৈব বারাহী নৈঋ ত্যাং খড়গধারিণী ৷৷ ১৭
 

প্রতীচ্যাং বারুণী রক্ষে বায়ব্যাং বায়ুদেবতা । 
উদীচ্যাং দিশি কৌবেরী ঐশান্যাং শূলধারিণী ॥১৮ 

ঊর্দ্ধে ব্রাহ্মী চ মাং রক্ষেদধস্থাদ বৈষ্ণবী তথা । 
এবং দশ দিশো রক্ষেচ্চামুণ্ডা শববাহনা ॥ ১৯ 

 দেবী ঐন্দ্রী আমার পূর্ব্বদিকে, অগ্নিদেবতা অগ্নিকোণে, বারাহী দক্ষিণে, খড়্গধারিণী নৈঋতকোণে, বারুণী পশ্চিমে, বায়ুদেবতা বায়ুকোণে, কৌবেরী উত্তরে, শূলধারিণী ঈশানে, ব্রাহ্মী উর্দ্ধদেশে, বৈষ্ণবী অধোদেশে, এইরূপে শববাহনা চামুণ্ডাদেবী আমার দশ দিক্ রক্ষা করুন ॥ ১৭–১৯ ॥

জয়া মামগ্রতঃ পাতু বিজয়া পাতু পৃষ্ঠতঃ ৷ 
অজিতা বামপার্শ্বে ত্ব দক্ষিণে চাপরাজিতা ॥ ২০ 

শিখাং মে ঘোতিনী রক্ষেদুমা মৃদ্ধি, ব্যবস্থিতা । 
মালাধরী ললাটে চ ভ্রুরোম ধ্যে যশস্বিনী ॥ ২১

 নেত্রয়োশ্চিত্রনেত্রা চ যমঘণ্টা তু পার্শ্বকে। 
*শঙ্খিনী চক্ষুষোন্মধ্যে শ্রোত্রয়োদ্বারবাসিনী ॥ ২২

কপোলৌ কালিকা রক্ষেৎ কর্ণমূলে চ শঙ্করী ।
নাসিকায়াং সুগন্ধা চ উত্তরৌষ্ঠে চ চৰ্চ্চিকা ৷৷ ২৩

 অধরে চায়তা চৈব জিহ্বায়াঞ্চ সরস্বতী। 
দন্তান্ রক্ষতু কৌমারী কণ্ঠমধ্যে তু চণ্ডিকা ॥ ২৪

ঘণ্টিকাং চিত্রঘণ্টা চ মহামায়া চ তালুকে। 
কামাখ্যা চিবুকং রক্ষেদ্ বাচং মে সৰ্ব্বমঙ্গলা ॥২৫

জয়া - দেবী আমার সম্মুখভাগ, বিজয়া পৃষ্ঠদেশ, অজিতা বামপার্শ্ব, অপরাজিতা দক্ষিণ পার্শ্ব রক্ষা করুন। ( এইরূপে ) ঘোতিনী আমার শিখা, উমা মস্তক, মালাধরী ললাট, বশস্বিনী ভ্রূযুগলের মধ্য, চিত্রনেত্রা নয়নদ্বয়, যমঘণ্ট। পার্শ্বদেশ, শঙ্খিনী চক্ষুদ্বয়ের মধ্য ( তারকা ), দ্বারবাসিনী কর্ণদ্বয়, কালিকা গণ্ডযুগল, শঙ্করী কর্ণমূল, সুগন্ধা নাসিকা, চচ্চিকা ওষ্ঠ, অমৃতা অধর, সরস্বতী জিহ্বা, কৌমারী দত্তপঙক্তি, চণ্ডিকা কণ্ঠ মধ্য, চিত্রঘণ্টা অগ্রজিহ্বা ( আজিভ ), মহামায়া তালুদেশ, কামাখ্যা

গ্রীবায়াং ভদ্রকালী চ পৃষ্ঠবংশে ধনুর্দ্ধরী। 
নীলগ্রীবা বহিঃকণ্ঠে নলিকাং নলকূবরী ॥ ২৬

খড়গধারিণ্যুতৌ স্কন্ধৌ বাহ্ মে বজ্রধারিণী । 
হস্তয়োদণ্ডিনী রক্ষেদম্বিকা চাঙ্গুলীস্তথা ॥ ২৭
 
নখান্ সুরেশ্বরী রক্ষেৎ কুক্ষৌ রক্ষেন্নরেশ্বরী। 
স্তনৌ রক্ষেন্মহাদেবী মনঃ শোকবিনাশিনী ৷ ২৮
 
হৃদয়ে ললিতা দেবী উদরে শূলধারিণী । 
নাভৌ চ কামিনী রক্ষেদ্ গুহ্যং গুহ্যেশ্বরী তথা ৷৷ ২৯
 
মেঢ়ং রক্ষতু দুর্গন্ধা পায়ুং মে গুহ্যবাসিনী। 
কট্যাং ভগবতী রক্ষেদূরূ মে ঘনবাহনা ॥ ৩০
 
জঙ্ঘে মহাবলা রক্ষোনূ মাধবনায়িকা । 
গুল্ফয়োর্নারসিংহী চ পাদপৃষ্ঠে চ কৌষিকী ॥ ৩১ 

চিবুক ( দাড়ি ), সৰ্ব্বমঙ্গলা বাক্য, ভদ্রকালী গ্রীবাদেশ ( ঘাড় ). ধনুর্দ্ধরী মেরুদণ্ড, নীলগ্রীবা কণ্ঠের বহির্ভাগ, নলকূবরী কণ্ঠনালী, খড়্গ গধারিণী স্কন্ধদ্বয়, বজ্রধারিণী বাহুদ্বয়, দণ্ডিনী হস্তযুগল, অম্বিকা অঙ্গুলিসমূহ, সুরেশ্বরী নথনিচয়, নরেশ্বরী বাহুমূল, মহাদেবী স্তনদ্বয়, শোকবিনাশিনী অন্তঃকরণ, ললিতা দেবী হৃদয় ( বক্ষঃ ), শূলধারিণী উদর, কামিনী নাভি, গুহ্যেশ্বরী গুহ্যদেশ (মলদ্বার), দুর্গন্ধা মেঢ় ( জননেন্দ্রিয় ), গুহাবাসিনী পায়ু ( মলদ্বারের অভ্যন্তরভাগ ), ভগবতী কটিদেশ (কোমর ), ঘনবাহনা ঊরুদ্বয়, মহাবলা জঙ্ঘাদ্বয়, মাধবনায়িকা জানুযুগল, নারসিংহী গুদ্বয়

পাদাঙ্গুলীঃ শ্রীধরী চ তলং পাতাল-বাসিনী । 
নখান দংষ্ট্রাকরালী চ কেশান্মে ঊর্দ্ধকেশিনী ॥ ৩২ 

রোমকূপাণি কৌমারী ত্বচং যোগেশ্বরী তথা । 
রক্তং মাংসং বসাং মজ্জামস্থি মেদশ্চ পাবর্তী ৷৷ ৩৩
 
অন্ত্রাণি কালরাত্রী চ পিত্তঞ্চ মুকুটেশ্বরী। 
পদ্মাবর্তী পদ্মকোষে কক্ষে চূড়ামণিস্তথা ॥ ৩৪ 

জ্বালামুখী নখজ্বালামভ্যো সৰ্ব্বসন্ধিষু।
শুক্রং ব্রহ্মাণী মে রক্ষেচ্ছায়াং ছত্রেশ্বরী তথা ৷ ৩৫ 

অহঙ্কারং মনো বুদ্ধিং রক্ষেন্মে ধর্ম্মধারিণী। 
প্রাণাপানৌ তথা ব্যানমুদানঞ্চ সমানকম্ ॥ ৩৬
 
বজ্রহস্তা তু মে রক্ষেং প্রাণান্ কল্যাণশোভনা ৷ 
রসে রূপে চ গন্ধে চ শব্দে স্পর্শে চ যোগিনী ॥৩৭

সত্ত্বং রজস্তমশ্চৈব রক্ষেন্নারায়ণী সদা ।
আয়ূ রক্ষতু বারাহী ধর্ম্মং রক্ষতু বৈষ্ণবী ॥ ৩৮

( গোড়ালি ), কৌষিকী পদদ্বয়ের পৃষ্ঠদেশ, শ্রীধরী পদাঙ্গুলিসমূহ, পাতাল বাসিনী পদতল, দংষ্ট্রাকরালী পদনথসমূহ, উর্দ্ধকেশিনী কেশসমূহ, কৌমারী লোমকূপসমূহ, যোগেশ্বরী ত্বক্, পার্ব্বতী রক্ত, মাংস, বসা, মজ্জা, অস্থি ও মেদ, কালরাত্রী অস্ত্রসমূহ, মুকুটেশ্বরী পিত্ত, পদ্মাবতী পদ্মকোষ (ফুসফুস্), চুড়ামণি কফ, জ্বালামুখী নখের দীপ্তি, অভেদ্যা সমস্ত সন্ধিস্থান

যশঃ কীৰ্ত্তিঞ্চ লক্ষ্মীঞ্চ সদা রক্ষতু বৈষ্ণবী। 
গোত্রমিন্দ্রাণী মে রক্ষেং পশূ রক্ষেচ্চ চণ্ডিকা ৷৷ ৩৯

পুত্রান্ রক্ষেন্মহালক্ষ্মীর্ভার্য্যাং রক্ষতু ভৈরবী। 
ধনেশ্বরী ধনং রক্ষেং কৌমারী কন্যকাং তথা ৷৷ ৪০ 

মার্গং ক্ষেমঙ্করী রক্ষে বিজয়া সৰ্ব্বতঃ স্থিতা । রক্ষাহীনঞ্চ যৎ স্থানং বর্জ্জিতং করচেন তু। তৎ সর্বং রক্ষ মে দেবি দুর্গে দুর্গাপহারিণি ॥ ৪১ সর্বরক্ষাকরং পুণ্যং কবচং সর্ব্বদা জপেৎ। ইদং রহস্যং বিপ্রর্যে ভক্ত্যা তব ময়োদিতম্ ॥ ৪২ দেব্যাস্ত কবচেনৈবমরক্ষিততনুঃ সুধীঃ। পাদমেকং ম গচ্ছেন্তু যদীচ্ছেচ্ছুতমাত্মনঃ ॥ ৪৩ ব্রহ্মাণী শুক্র, ছত্রেশ্বরী ছায়া, ধর্ম্মচারিণী অহঙ্কার মন এবং বুদ্ধি, কল্যাণ শোভনা বজ্রহস্তা প্রাণ-অপান- ব্যান-উদান-সমান ভেদে পঞ্চ প্রাণবায়ু, যোগিনী রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ ও শব্দ, নারায়ণী সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ, বারাহী আয়ুঃ, বৈষ্ণবী ধৰ্ম্ম, যশ, কীর্তি এবং লক্ষ্মী, ইন্দ্রাণী গোত্র, চণ্ডিকা গবাদি পশুসমূহ, মহালক্ষ্মী পুত্ৰসমূহ, ভৈরবী ভার্য্যা, ধনেশ্বরী ধন, কৌমারী কন্যা, ক্ষেমঙ্করী গন্তব্যপথ এবং বিজয়া সর্ব্বত্রই রক্ষা করুন । হে দুঃখনাশিনি ! দুর্গে ! আমার যে যে স্থান কবচ দ্বারা রক্ষিত হয় নাই, তং সমস্তই তুমি রক্ষা কর ॥ ২০–৪১ ॥ হে বিপ্ৰর্ষে ! আমি তোমার ভক্তিতে আকৃষ্ট হইয়া এই গোপনীয় কবচ বলিলাম; সর্ব্বরক্ষাকর পুণ্যদায়ক এই কবচ 


কবচেনাবৃতে। নিত্যং যত্র যত্রাবতিষ্ঠতে। 
তত্র তত্রার্থলাভঃ স্যাদ্ বিজয়ঃ সাৰ্ব্বকালিক ॥ ৪৪

যং যং চিন্তয়তে কামং তং তমাপ্নোতি লীলয়া ৷ 

পরমৈশ্বর্য্যমতুলং প্রাপ্নোত্যবিকলঃ পুমান্ ॥ ৪৫ 

নির্ভয়ো জায়তে মৰ্ত্তঃ সংগ্রামেষপরাজিতঃ । 
ত্রৈলোক্যে চ ভবেৎ পূজ্যঃ কবচেনাবৃতঃ পুমান্ ॥৪৬ 

ইদং তু দেব্যাঃ কবচং দেবানামপি দূর্ল্লভম্ ।
যঃ পঠেৎ প্রয়তো নিত্য ত্রিসন্ধ্যং শ্রদ্ধয়ান্বিতঃ ৷৷ ৪৭ 

দেবী বশ্য৷ ভবেত্তস্য ত্রৈলোক্যে চাপরাজিতঃ । 
জীবেদ্ বর্ধশতং সাষ্টমপমৃত্যু-বির্জ্জিতঃ ॥ ৪৮


সর্ব্বদা জপ করিবে। মঙ্গলকামী সুধীগণ এই কবচের দ্বারা আত্মরক্ষা না করিয়া একপাদ গমন করিবেন না ॥ ৪২/৪৩ | এই কবচ দ্বারা রক্ষিত হইয়া যে যে স্থানে যাইবে, তাহার সেই সেই স্থানেই অভীষ্ট লাভ এবং সর্ব্বদা বিজয় লাভ হইবে ৷ ৪৪ মনুষ্যগণ ইহা দ্বারা সম্পূর্ণভাবে পরমৈশ্বর্য লাভ করিতে পারিবে এবং অনায়াসেই ইচ্ছানুরূপ ফল লাভ করিবে ॥ ৪৫ ॥ এই কবচ দ্বারা রক্ষিত মনুষ্য নির্ভয় হইয়া যুদ্ধে জয়লাভ করিবে এবং ত্রৈলোক্যে পূজিত হইবে ৷ ৪৬ ॥ ত্রিসন্ধ্যায় শ্রদ্ধাসহকারে একান্তমনে দেবগণেরও দুর্লভ এই কবচ পাঠ যে ব্যক্তি করিবে, দেবী তাহার বশীভূত হইবেন, সেই ব্যক্তি ত্রিলোকমধ্যে অজেয় হইয়া সম্পূর্ণ আয়ুঃ ভোগ করিবে, তাহার অপমৃত্যু হইবে না ৪৭|৪৮ ৷


নশ্যন্তি ব্যাধয়ঃ সৰ্ব্বে লুতা-বিস্ফোটকাদয়ঃ ।
স্থাবরং জঙ্গমং বাপি কৃত্রিমং বাপি যদ্ বিষম্ ॥ ৪৯
 
অভিচারাণি সর্ব্বাণি মন্ত্রযন্ত্রাণি ভূতলে । 
ভূচরাঃ খেচরাশ্চৈব কুলজাশ্চোপদেশজাঃ ॥ ৫০ 

সহজাঃ কুলিকা নাগা ডাকিনী শাকিনী তথা । 
অন্তরীক্ষচরা ঘোরা ডাকিন্যশ্চ মহারবাঃ ॥ ৫১ 

গ্রহভূত-পিশাচাশ্চ যক্ষ-গন্ধর্ব-রাক্ষসাঃ। 
ব্রহ্মরাক্ষস-বেতালাঃ কুষ্মাণ্ডা ভৈরবাদয়ঃ ॥ 
নশ্যন্তি দর্শনাভস্য করচেনাতো হি যঃ ॥ ৫২

 মানোন্নতির্ভবেদ্রাজ্ঞস্তেজোবৃদ্ধিঃ পরা ভবেৎ । 
যশোবৃদ্ধির্ভবেৎ পুংসাং কীৰ্ত্তিবৃদ্ধিশ্চ জায়তে ॥ ৫৩

 স্মাজ্জপেং সদা ভক্ত্যা কবচং কামদং মুনে । 
জপেৎ সপ্তশতীং চণ্ডীং কৃত্বা কবচমাদিতঃ ৷৷ 
নির্বিঘ্নেন ভবেৎ সিদ্ধিশ্চণ্ডীজপ-সমুদ্ভবা ॥ ৫৪

যে ব্যক্তি এই কবচ দ্বারা রক্ষিত হয়, তাহার দুষ্টব্রণাদি সমস্ত ব্যাধি বিনষ্ট হয়, তাহার প্রতি প্রযুক্ত স্থাবর জঙ্গমাদি বিষ, উচ্চাটনাদি সমস্ত অভিচার কিংবা সমস্ত মন্ত্রতন্ত্র বিনষ্ট ও বিফল হয়। গ্রহ, ভূত, পিশাচ, ডাকিনী, যোগিনী, ব্রহ্মরাক্ষস, বেতাল, কুষ্মাণ্ড, ভৈরবাদি ভূচর ও খেচর, যাবতীয় অপদেবতা সমূহ তাহার দর্শন মাত্রেই পলায়ন করে ॥ ৪১–৫২ ॥

যাবভূমণ্ডলং ধত্তে সশৈলবনকাননম্ । 
তাবত্তিষ্ঠতি মেদিন্যাং জপকৰ্ত্তহি সন্ততিঃ ॥ ৫৫ 

দেহান্তে পরমং স্থানং যৎ সুরৈরপি দুল ভম্। 
সম্প্রাপ্নোতি মনুষ্যোঽসৌ মহামায়াপ্রসাদতঃ ॥ ৫৬ 

তত্র গচ্ছতি ভক্তোঽসৌ পুনরাগমনং ন হি । 
লভতে পরমং স্থানং শিবেন সমতাং ব্রজেৎ ॥ ৫৭ ওঁ ৷ 


ইতি শ্রীহরিহরব্রহ্ম-বিরচিতং দেব্যাঃ কবচম্‌
সমাপ্তম্ ৷৷


যেহেতু এই কবচ দ্বারা রাজসমীপে মানোন্নতি এবং তেজঃ, যশঃ ও কীৰ্ত্তি বৃদ্ধি হইয়া থাকে, অতএব হে মুনে ! অভীষ্টদায়ক এই কবচ ভক্তিভাবে সদা পাঠ করিবে। প্রথমে এই কবচ পাঠপূর্ব্বক সপ্তশতী পাঠ করিলে চণ্ডীপাঠোক্ত ফলের সিদ্ধি লাভ হইয়া থাকে ৷ ৫৩ | 58 যে পর্যন্ত পৰ্ব্বত কাননাদি সহ এই ভূমণ্ডল বিদ্যমান থাকিবে তাবৎকাল পর্যন্ত জপকারী ব্যক্তি মহামায়ার অনুগ্রহে দেহান্তে দেবগণেরও অগম্য পরমলোক প্রাপ্ত হইয়া শিবের সাযুজ্য লাভ করিবেন এবং তাঁহার মর্ত্যধামে পুনরাগমন হইবে না ॥ ৫৫ – ৫৭


| * | হরিহরব্রহ্মবিরচিত দেবীকবচের অনুবাদ সমাপ্ত | *