সপ্তশ্লোকী দুর্গা
শিব উবাচ
দেবি ত্বং ভক্তসুলভে সর্বকার্যবিধায়িনী।
কলৌ হি কার্যসিদ্ধ্যর্থমুপায়ং ব্রূহি যত্নতঃ ।।
শিব বললেন-হে দেবি! তুমি ভক্তের কাছে সহজলভ্য এবং সমস্ত কর্মের বিধানকারিণী। কলিযুগে কামনাপূরণের যদি কোনও উপায় থাকে, তবে তোমার বাণীদ্বারা সম্যভাবে তা বলো।
দেব্যুবাচ
শৃণু দেব প্রবক্ষ্যামি কলৌ সর্বেষ্টসাধনম্।
ময়া তবৈব স্নেহেনাপ্যম্বাস্তুতিঃ প্রকাশ্যতে।।
দেবী বললেন-হে দেব! আমার ওপরে আপনার অসীম স্নেহ। কলিযুগে সর্বকামনা সিদ্ধির যে সাধন; তা আমি বলছি, শুনুন। তার নাম হল 'অন্বাস্তুতি'।
ওঁ অস্য শ্রীদুর্গাসপ্তশ্লোকীস্তোত্রমন্ত্রস্য নারায়ণ ঋষিঃ, অনুষ্টুপ্ ছন্দঃ, শ্রীমহাকালীমহালক্ষ্মীমহাসরস্বত্যো দেবতাঃ, শ্রীদুর্গাপ্রীত্যর্থং সপ্তশ্লোকীদুর্গাপাঠে বিনিয়োগঃ।
ওঁ এই দুর্গাসপ্তশ্লোকী স্তোত্রের ঋষি হলেন নারায়ণ, ছন্দ অনুষ্টুপ, শ্রীমহাকালী, মহালক্ষ্মী এবং মহাসরস্বতী হলেন দেবতা; শ্রীদুর্গার প্রীত্যার্থে সপ্তশ্লোকী দুর্গাপাঠে এর বিনিয়োগ করা হয়।
ওঁ জ্ঞানিনামপি চেতাংসি দেবী ভগবতী হি সা।
বলাদাকৃষ্য মোহায় মহামায়া প্রযচ্ছতি। ১ ।।
এই ভগবতী মহামায়া দেবী জ্ঞানীদের চিত্তকেও বলপূর্বক আকর্ষণ করে মোহময় করে দেন। ১।।
দুর্গে স্মৃতা হরসি ভীতিমশেষজন্তোঃ,
স্বস্থৈঃ স্মৃতা মতিমতীব শুভাং দদাসি।
দারিদ্র্যদুঃখভয়হারিণি কা ত্বদন্যা,
সর্বোপকারকরণায় সদার্দ্রচিত্তা। ২ ।।
হে মা দুর্গা! আপনি স্মরণমাত্রই সব প্রাণীর ভয় হরণ করে নেন এবং স্বস্থ পুরুষের দ্বারা চিন্তা করলে তাকে পরম কল্যাণময়ী বুদ্ধি প্রদান করেন। দুঃখ, দারিদ্র্য ও ভয়হারিণী দেবি! আপনি ছাড়া দ্বিতীয়া কে আছেন যার চিত্ত সকলের উপকার করার জন্য সততই দয়াদ্র ।। ২।।
সর্বমঙ্গলমঙ্গলে শিবে সর্বার্থসাধিকে।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে। ৩ ।।
নারায়নী! আপনি সর্বপ্রকার মঙ্গলপ্রদানকারী মঙ্গলময়ী, কল্যাণদায়িণী শিবা। আপনি সর্ব পুরুষার্থ সিদ্ধিদায়িনী, শরণাগতবৎসলা, ত্রিনয়নী গৌরী। আপনাকে প্রণাম।। ৩।।
শরণাগতদীনার্তপরিত্রাণপরায়ণে
সর্বস্যার্তিহরে দেবি নারায়ণি নমোহস্তু তে॥৪॥
শরণাগত, দীন এবং পীড়িতকে রক্ষায় সতত নিরত তথা সকলের পীড়া নিবারণকারিণী নারায়ণী দেবি! আপনাকে প্রণাম।। ৪।।
সর্বস্বরূপে সর্বেশে সর্বশক্তিসমন্বিতে।
ভয়েভ্যস্ত্রাহি নো দেবি দুর্গে দেবি নমোহস্তু তে। ৫ ।।
সর্বশ্বরূপা, সর্বেশ্বরী তথা সর্বপ্রকার শক্তিসম্পন্না দিব্যরূপা দেবি দুর্গে ! সকল ভয় থেকে আমাদের রক্ষা করুন, আপনাকে প্রণাম।। ৫।।
রোগানশেষানপহংসি তুষ্টা
রুষ্টা তু কামান্ সকলানভীষ্টান্।
ত্বামাশ্রিতানাং ন বিপন্নরাণাং
ত্বামাশ্রিতা হ্যাশ্রয়তাং প্রয়ান্তি।। ৬ ।।
হে দেবি! আপনি প্রসন্ন হলে সর্বব্যাধি দূর করে দেন, আবার কুপিত হলে মনোবাঞ্ছিত সব কামনা নাশ করে দেন। যারা আপনার শরণ গ্রহণ করেছে, তাদের কাছে বিপদ কখনও আসে না। আপনার শরণগ্রহণকারী ব্যক্তি অপরের শরণদাতা হন।। ৬।।
সর্বাবাধাপ্রশমনং ত্রৈলোক্যস্যাখিলেশ্বরি।
এবমেব ত্বয়া কার্যমস্মদ্বৈরিবিনাশনম্।। ৭।।
হে সর্বেশ্বরি! আপনি এরূপে তিন লোকের সমস্ত বাধা দূর করুন এবং আমাদের শত্রু নাশ করুন।। ৭।।