Durga Saptashati Image

অথ দ্বাদশোহধ্যায়ঃ

দ্বাদশ অধ্যায়

দেবী-চরিত্রের পাঠ-মাহাত্ম্য

ধ্যানম্

ওঁ বিদ্যুদ্দামসমপ্রভাং মৃগপতি-স্বন্ধ-স্থিতাং ভীষণাং কন্যাভিঃ করবাল-খেট-বিলসদ্ধস্তাভিরাসেবিতাম্।
হন্তৈশ্চক্রগদাসি-খেট-বিশিখাংশ্চাপং গুণং তর্জনীং বিভ্রাণামনলাম্বিকাং শশিধরাং দুর্গাং ত্রিনেত্রাং ভজে।।

ত্রিনয়না দুর্গাদেবীকে আমি ধ্যান করি। তাঁর শ্রীঅঙ্গের প্রভা বিদ্যুদ্দামতুল্য। তিনি সিংহারূঢ়া হয়ে ভীষণারূপে প্রতীয়মানা। খড়া ও ঢাল হাতে নিয়ে অনেক কন্যাগণ তাঁকে সেবারতা। তাঁর নিজের হাতে চক্র, গদা, তরোয়াল, ঢাল, বাণ, ধনুক, পাশ এবং তিনি তর্জনী মুদ্রা ধারণ করে রয়েছেন। তাঁর স্বরূপ অগ্নিময় এবং মস্তকে চন্দ্রের মুকুট ধারণ করে আছেন।

'ওঁ' দেব্যুবাচ।। ১ ৷৷

দেবী বললেন-৷৷ ১ ।

এভিঃ স্তবৈশ্চ মাং নিত্যং ন্তোষ্যতে যঃ সমাহিতঃ।
তস্যাহং সকলাং বাধাং নাশয়িষ্যাম্যসংশয়ম্।। ২৷৷

হে দেবগণ! একাগ্রচিত্তে প্রতিদিন যে এই স্তুতি দ্বারা আমার স্তব করবে, তার সব রকম বাধাবিপত্তি আমি নিশ্চয়ই দূর করব। ২ ।।

মধুকৈটভনাশঞ্চ মহিষাসুরঘাতনম্।
কীর্তয়িষ্যন্তি যে তদ্বদ্ বধং শুম্ভনিশুম্ভয়োঃ ৷৷ ৩ ৷৷

যে এরূপে মধুকৈটভ বধ, মহিষাসুর বধ এবং শুম্ভ-নিশুম্ভবধ বিষয়ক চরিত পাঠ করবে ।। ৩ ।।

অষ্টম্যাঞ্চ চতুর্দশ্যাং নবম্যাঞ্চৈকচেতসঃ।
শ্রোষ্যন্তি চৈব যে ভক্ত্যা মম মাহাত্ম্যমুত্তমম্।। ৪৷৷

এবং অষ্টমী, চতুর্দশী ও নবমীতেও যে সমাহিতচিত্তে ভক্তিভরে আমার এই উত্তম মাহাত্ম্য শুনবে। ৪ ।।

ন তেষাং দুষ্কৃতং কিঞ্চিদ্ দুষ্কৃতোখা ন চাপদঃ।
ভবিষ্যতি ন দারিদ্র্যং ন চৈবেষ্টবিয়োজনম্ ।। ৫ ৷৷

তাকে কোনও রকম পাপই স্পর্শ করতে পারবে না। পাপজনিত কোন বিপদ-আপদও তার আসবে না। তার ঘরে কখনও দারিদ্র্য থাকবে না এবং তাকে কখনও প্রিয়বিয়োগজনিত কষ্ট ভুগতে হবে না।। ৫ ।।

শত্রুতো ন ভয়ং তস্য দস্যুতো বান রাজতঃ।
ন শস্ত্রানলতোয়ৌঘাৎ কদাচিৎ সম্ভবিষ্যতি। ৬৷৷

শুধু এইই নয়, তাকে শত্রু, দস্যু, রাজা, শস্ত্র, অগ্নি ও জলপ্রবাহ থেকে কখনও কোনও বিপদের ভয় থাকবে না।। ৬ ।।

তস্মান্মমৈতন্মাহাত্ম্যং পঠিতব্যং সমাহিতৈঃ।
শ্রোতব্যঞ্চ সদা ভক্ত্যা পরং স্বস্ত্যয়নং হি তৎ॥৭॥

এইজন্য একমনে ভক্তির সাথে আমার এই মাহাত্ম্য সর্বদা পাঠ করা এবং শোনা কর্তব্য। এই মাহাত্ম্য পরম কল্যাণকারক।। ৭ ॥

উপসর্গানশেষাংস্তু তথা মহামারীসমুদ্ভবান্।
ত্রিবিধমুৎপাতং মাহাত্ম্যং শময়েন্মম। ৮৷৷

আমার এই মাহাত্ম্য মহামারীজনিত সমস্ত উপদ্রব এবং আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক-এই ত্রিবিধ উৎপাতের নিবৃত্তি করে। ৮।।

যত্রৈতৎ পঠ্যতে সম্যনিত্যমায়তনে মম।
সদা ন তদ্বিমোক্ষ্যামি সান্নিধ্যং তত্র মে স্থিতম্।। ৯৷৷

যে গৃহে আমার এই মাহাত্ম্য প্রতিদিন বিধিপূর্বক পাঠ করা হয়, আমি সেই স্থান কখনও পরিত্যাগ করি না। আমি সেখানে অবিচল হয়ে অবস্থান করি।। ৯ ।।

বলিপ্রদানে পূজায়ামগ্নিকার্যে মহোৎসবে।
সর্বং মমৈতচ্চরিতমুচ্চার্যং শ্রাব্যমেব চ৷৷ ১০৷৷

বলিদান, পূজা, হোম তথা মহোৎসবের শুভদিনে আমার এই চরিতকথা সম্পূর্ণরূপে পাঠ ও শ্রবণ করা কর্তব্য।। ১০ ।।

জানতাহজানতা বাপি বলিপূজাং তথা কৃতাম্।
প্রতীচ্ছিষ্যাম্যহং প্রীত্যা বহ্নিহোমং তথা কৃতম্ ৷৷ ১১ ৷৷

এমন করার পর মানুষ বিধি জেনে বা না জেনেও আমার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত বলিদান, পূজা বা যজ্ঞাদি যা করবে, আমি অতীব প্রীতির সাথে তা গ্রহণ করব। ১১ ।।

শরৎকালে মহাপূজা ক্রিয়তে যা চ বার্ষিকী।
তস্যাং মমৈতন্মাহাত্ম্যং শ্রুত্বা ভক্তিসমন্বিতঃ ৷৷ ১২ ৷৷

সর্বাবাধা বিনির্মুক্তো ধনধান্যসুতান্বিতঃ।
মনুষ্যো মৎপ্রসাদেন ভবিষ্যতি ন সংশয়ঃ ৷৷ ১৩৷৷

শরৎকালে যে বার্ষিক মহাপূজা অনুষ্ঠিত হয়, সেই সময় আমার এই মাহাত্ম্য যে ভক্তিসহকারে শ্রবণ করে, সেই মানুষ আমার কৃপায় সকল বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত হয় এবং ধন, ধান্য ও পুত্রাদি লাভ করে-এতে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই। ১২- ১৩ ।।

শ্রুত্বা মমৈতন্মাহাত্ম্যং তথা চোৎপত্তয়ঃ শুভাঃ।
পরাক্রমঞ্চ যুদ্ধেষু জায়তে নির্ভয়ঃ পুমান্৷৷ ১৪৷৷

আমার এই মাহাত্ম্য, আমার মঙ্গলজনক আবির্ভাবের কথা এবং যুদ্ধে আমার পরাক্রমের বিষয় শুনলে মানুষ নির্ভয় হয়ে যায় ৷৷ ১৪ ।।

রিপবঃ সংক্ষয়ং যান্তি কল্যাণঞ্চোপপদ্যতে।
নন্দতে চ কুলং পুংসাং মাহাত্ম্যং মম শৃণ্বতাম্। ১৫৷৷

আমার মাহাত্ম্যশ্রবণকারী মানুষের শত্রুনাশ হয়, কল্যাণ প্রাপ্তি হয় এবং বংশের সুখসমৃদ্ধি বৃদ্ধি হয়৷৷ ১৫ ॥

শান্তিকর্মণি সর্বত্র তথা দুঃস্বপ্নদর্শনে।
গ্রহপীড়াসু চোগ্রাসু মাহাত্ম্যং শৃণুয়ান্মম।। ১৬৷৷

সকল প্রকার শান্তিকর্মে, দুঃস্বপ্নদর্শনে এবং ভয়ঙ্কর গ্রহপীড়ার সময় আমার এই মাহাত্ম্য শ্রবণ করা কর্তব্য।। ১৬ ।।

উপসর্গাঃ শমং যান্তি গ্রহপীড়াশ্চ দারুণাঃ।
দুঃস্বপ্নঞ্চ নৃভির্দষ্টং সুস্বপ্নমুপজায়তে।। ১৭৷৷

এই মাহাত্ম্য পাঠে বা শ্রবণে সব রকম আপদবিপদ ও ভয়ানক গ্রহপীড়ার শান্তি হয় এবং মনুষ্যকর্তৃক দৃষ্ট দুঃস্বপ্ন সুস্বপ্নে পরিণত হয়। ১৭ ।।

বালগ্রহাভিভূতানাং বালানাং শান্তিকারকম্।
সংঘাতভেদে চ নৃণাং মৈত্রীকরণমুত্তমম্।। ১৮ ৷৷

বাল্যগ্রহদ্বারা পীড়িত বালকদের পক্ষে এই মাহাত্ম্য শান্তিকারক এবং মানুষদের সমষ্টিতে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হলে এটি ভালভাবে মিত্রতা সৃষ্টি করায়। ১৮ ।।

দুর্বৃত্তানামশেষাণাং বলহানিকরং পরম্।
রক্ষোভূতপিশাচানাং পঠনাদেব নাশনম্৷৷ ১৯ ৷৷

এই মাহাত্ম্য সকল দুরাচারীদের অশুভ বল নাশ করে। শুধুমাত্র পাঠ করলেই রাক্ষস, ভূত ও পিশাচগণ দূর হয়ে যায়।। ১৯ ।।

সর্বং মমৈতন্মাহাত্ম্যং মম সন্নিধিকারকম্।
পশুপুষ্পার্ঘ্যধূপৈশ্চ গন্ধদীপৈস্তথোত্তমৈঃ৷৷ ২০৷৷

বিপ্রাণাং ভোজনৈর্হোমৈঃ প্রোক্ষণীয়ৈরহর্নিশম্।
অন্যৈশ্চ বিবিধৈর্ভোগৈঃ প্রদানৈর্বৎসরেণ যা৷ ২১৷

প্রীতির্মে ক্রিয়তে সাস্মিন্ সকৃৎ সুচরিতে শ্রুতে।
শ্রুতং হরতি পাপানি তথারোগ্যং প্রযচ্ছতি। ২২ ৷৷

আমার এই মাহাত্ম্যের সম্পূর্ণ পাঠ বা শ্রবণে পাঠক বা শ্রোতা আমার সান্নিধ্য লাভ করে। পশু, পুষ্প, অর্ঘ্য, ধূপ, দীপ, গন্ধাদি উত্তম উপচারে পূজা করলে, ব্রাহ্মণ ভোজনাদি করালে, যাগযজ্ঞাদি ক্রিয়াকর্ম, প্রতিদিন অভিষেক, নানাপ্রকার অন্যান্য ভোজ্য ইত্যাদি অর্পণ এবং দান ইত্যাদি দ্বারা এক বৎসর পূজা করলে আমি যতটা সন্তুষ্ট হই, এই মাহাত্ম্য একবার মাত্র শুনলে আমি সেই প্রীতি লাভ করি। এই মাহাত্ম্য শ্রবণে পাপনাশ এবং আরোগ্যপ্রাপ্তি হয়। ২০-২২।

রক্ষাং করোতি ভূতেভ্যো জন্মনাং কীর্তনং মম।
যুদ্ধেষু চরিতং যন্মে দুষ্টদৈত্যনিবর্হণম্।। ২৩৷৷

আমার এই আবির্ভাবপ্রসঙ্গ কীর্তন সমস্ত ভূতপ্রেতাদির হাত থেকে রক্ষা করে এবং আমার যুদ্ধচরিত দুষ্ট দৈত্যদের সংহার করে।। ২৩।।

তস্মিন্ ছুঁতে বৈরিকৃতং ভয়ং পুংসাং ন জায়তে।
যুস্মাভিঃ স্তুতয়ো যাশ্চ যাশ্চ ব্রহ্মর্ষিভিঃ কৃতাঃ৷৷ ২৪৷৷

এই মাহাত্ম্য শ্রবণ করলে মানুষের শত্রুভয় থাকে না। হে দেবগণ! তোমরা এবং ব্রহ্মর্ষিগণ আমার যে স্তুতি করেছ । ২৪ ।

ব্রহ্মণা চ কৃতাস্তাস্তু প্রযচ্ছন্তি শুভাং মতিম্।
অরণ্যে প্রান্তরে বাপি দাবাগ্নিপরিবারিতঃ৷৷ ২৫ ৷৷

দস্যুভির্বা বৃতঃ শূন্যে গৃহীতো বাপি শত্রুভিঃ।
সিংহব্যাঘ্রানুযাতো বা বনে বা বনহস্তিভিঃ৷৷ ২৬৷৷

এবং ব্রহ্মা যে স্তুতি করেছেন, এ সবই কল্যাণময়ী বুদ্ধি প্রদান করে। বনে, আকাশে, অথবা দাবানলে পরিবেষ্টিত হলে। ২৫ ॥

রাজ্ঞা ক্রুদ্ধেন চাজ্ঞপ্তো বধ্যো বন্ধগতোহপি বা।
আঘূর্ণিতো বা বাতেন স্থিতঃ পোতে মহার্ণবে৷ ২৭ ॥

নির্জন স্থানে, দস্যু দ্বারা আক্রান্ত হলে বা শত্রুর হাতে ধরা পড়লে অথবা জঙ্গলে সিংহ, বাঘ, বন্য হাতী ধাওয়া করলে।। ২৬।

পতৎসু বাপি শস্ত্রেযু সংগ্রামে ভূশদারুণে।
সর্বাবাধাসু ঘোরাসু বেদনাভ্যর্দিতোহপি বা৷ ২৮৷৷

আবার অত্যন্ত ভয়ানক যুদ্ধে শস্ত্রাঘাতে জর্জরিত হলে অথবা রোগ বেদনায় পীড়িত হলে, উপর্যুপরি উৎকট বাধাবিপত্তি উপস্থিত হলে। ২৮ ।।

স্মরন্ মমৈতচ্চরিতং নরো মুচ্যেত সঙ্কটাৎ।
মম প্রভাবাৎ সিংহাদ্যা দস্যবো বৈরিণস্তথা। ২৯ ৷৷

ক্রুদ্ধ রাজার দ্বারা প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত বা কারারুদ্ধ হলে অথবা মহাসমুদ্রে জাহাজের মধ্যে ঝড়বাত্যায় পড়লে।। ২৭ ।।

দূরাদেব পলায়ন্তে স্মরতশ্চরিতং মম। ৩০।।

যে আমার এই চরিতকথা স্মরণ করে, সে এই সব সংকট থেকে মুক্ত হয়। আমার এই চরিতকথা শ্রবণ করলে আমার প্রভাবে সিংহাদি হিংস্র জন্তু এবং দস্যু তস্করাদি ও শত্রুগণ সেই মানুষের থেকে দূরে পালিয়ে যায়। ২৯-৩০।

ঋষিরুবাচ ।। ৩১ ।।

মেধা ঋষি বললেন-। ৩১ ।।

ইত্যুক্বা সা ভগবতী চণ্ডিকা চণ্ডবিক্রমা ৷৷ ৩২৷৷

পশ্যতামেব দেবানাং তত্রৈবান্তরধীয়ত।
তেহপি দেবা নিরাতঙ্কাঃ স্বাধিকারান্ যথা পুরা ৷৷ ৩৩৷৷

যজ্ঞভাগভুজঃ সর্বে চক্রর্বিনিহতারয়ঃ।
দৈত্যাশ্চ দেব্যা নিহতে শুন্তে দেবরিপৌ যুধি ৷৷ ৩৪ ৷৷

জগদ্বিধ্বং সিনি তস্মিন্মহোগ্রেহ তুলবিক্রমে।নিশুন্তে চ মহাবীর্যে শেষাঃ পাতালমাযযুঃ ৷৷ ৩৫ ৷৷

এই কথা বলে প্রচণ্ড পরাক্রমশালিনী ভগবতী চণ্ডিকা সেখানেই সব দেবগণের চোখের সামনেই অন্তর্ধান করলেন। তারপর শত্রুরা ধ্বংস হলে সব দেবতারাও নির্ভয় হয়ে আগের মতোই যজ্ঞভাগ উপভোগ করতে করতে নিজ নিজ কর্তব্য পালন করতে লাগলেন। জগৎ ধ্বংসকারী মহাভয়ংকর অতুল পরাক্রমশালী দেবশত্রু শুম্ভ ও মহাবলী নিশুম্ভ দেবী কর্তৃক যুদ্ধে নিহত হলে অবশিষ্ট অসুরগণ পাতালে চলে গেল। ৩২-৩৫ ।

এবং ভগবতী দেবী সা নিত্যাপি পুনঃ পুনঃ।
সম্ভূয় কুরুতে ভূপ জগতঃ পরিপালনম্।। ৩৬৷৷

হে মহারাজ! এইভাবে সেই ভগবতী অম্বিকা দেবী নিত্যা হয়েও (অর্থাৎ জন্মাদিশূন্যা হয়েও) পুনঃ পুনঃ আবির্ভূতা হয়ে জগৎকে রক্ষা করেন।। ৩৬ ।।

তয়ৈতন্মোহ্যতে বিশ্বং সৈব বিশ্বং প্রসূয়তে।
সা যাচিতা চ বিজ্ঞানং তুষ্টা ঋদ্ধিং প্রযচ্ছতি।। ৩৭ ৷

তিনিই এই বিশ্বকে মায়ামুগ্ধ করেন, তিনিই জগৎকে সৃষ্টি করেন আবার তিনিই প্রার্থনার দ্বারা তুষ্টা হয়ে বিজ্ঞান (অর্থাৎ আত্মতত্ত্বজ্ঞান) এবং ঐশ্বর্য দান করেন। ৩৭।।

ব্যাপ্তং তয়ৈতৎ সকলং ব্রহ্মাণ্ডং মনুজেশ্বর।
মহাকাল্যা মহাকালে মহামারীস্বরূপয়া।। ৩৮ ৷৷

হে মহারাজ! মহাপ্রলয়ের সময় মহামারীরূপে এই মহাকালীই এই সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া অবস্থান করেন। ৩৮ ।।

সৈব কালে মহামারী সৈব সৃষ্টির্ভবত্যজা।
স্থিতিং করোতি ভূতানাং সৈব কালে সনাতনী ৷৷ ৩৯ ৷৷

ইনিই প্রলয়কালে মহামারীরূপে সংহাররূপিণী হন আবার তিনিই স্বয়ং জন্মরহিতা হয়েও সৃষ্টিকালে সৃষ্টিশক্তিরূপে আবির্ভূতা হন। এই সনাতনী দেবীই সময়মতো (স্থিতিসময়ে) বিশ্বপালন করেন ৷৷ ৩৯ ৷৷

ভবকালে নৃণাং সৈব লক্ষ্মীবৃদ্ধিপ্রদা গৃহে।
সৈবাভাবে তথাহলক্ষ্মীর্বিনাশায়োপজায়তে।। ৪০৷৷

তিনিই বৈভবসময়ে মানুষের ঘরে লক্ষ্মীরূপে স্থিতা হয়ে সুখ সমৃদ্ধি প্রদান করেন আবার তিনিই দুঃসময়ে অলক্ষ্মীরূপে সমস্ত ধ্বংসের কারণ হয়ে দুঃখ- দারিদ্র্যাদি দেন ।। ৪০ ।।

স্তুতা সংপূজিতা পুষ্পৈধূপগন্ধাদিভিস্তথা।
দদাতি বিত্তং পুত্রাংশ্চ মতিং ধর্মে গতিং শুভাম্৷৷ ওঁ ৷৷ ৪১ ৷৷

গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপাদি উপচারে পূজা করে দেবীর স্তুতি করলে তিনি ধনপুত্রাদি, শ্রদ্ধাযুক্ত ধর্মবুদ্ধি এবং উত্তম গতি প্রদান করেন। ৪১ ৷৷

ইতি শ্রীমার্কণ্ডেয়পুরাণে সাবর্ণিকে মন্বন্তরে দেবীমাহাত্ম্যে ফলস্তুতির্নাম দ্বাদশোহধ্যায়ঃ। ১২ ৷৷

এই অধ্যায়ে উবাচ-২, অর্দ্ধশ্লোক-২, শ্লোক ৩৭, মোট-৪১, আদি হতে সর্বমোট-৬৭১ হল।

শ্রীমার্কণ্ডেয়পুরাণে সাবর্ণিক মন্বন্তরে দেবীমাহাত্ম্যপ্রসঙ্গে 'ফলস্তুতি' নামক দ্বাদশ অধ্যায় সম্পূর্ণ হল । ১২ ৷