পাঠবিধি (১)
সাধক স্নান করে পবিত্র হয়ে আসনশুদ্ধি করে শুদ্ধাসনে বসবে; শুদ্ধ জল, পূজাসামগ্রী ও শ্রীদুর্গাসপ্তশতী (চণ্ডী) পুস্তক সামনে রাখবে। কাষ্ঠাদি নির্মিত শুদ্ধাসনে পুস্তকটি রাখতে হবে। নিজ রুচি অনুযায়ী ললাটে ভস্ম, চন্দন অথবা লাল সিন্দূর এঁকে নেবে, শিখাবন্ধন করবে; তারপর পূর্বমুখ হয়ে তত্ত্বশুদ্ধির জন্য চারবার আচমন করবে এবং নিম্নলিখিত মন্ত্র চারটি ক্রমশঃ পাঠ করবে-
ওঁ ঐং আত্মতত্ত্বং শোধয়ামি নমঃ স্বাহা।
ওঁ হ্রীং বিদ্যাতত্ত্বং শোধয়ামি নমঃ স্বাহা।
ওঁ ক্লীং শিবতত্ত্বং শোধয়ামি নমঃ স্বাহা।
ওঁ ঐং হ্রীং ক্লীং সর্বতত্ত্বং শোধয়ামি নমঃ স্বাহা।।
তারপর প্রাণায়াম করে গণেশাদি দেবতাকে এবং গুরু প্রণাম করে 'পবিত্রেস্থো বৈষ্ণব্যৌ' ইত্যাদি মন্ত্রে কুশের পবিত্র আংটি ধারণ করে হাতে অক্ষত লাল ফুল ও জল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্রে সঙ্কল্প করবে-
ওঁ বিষ্ণুর্বিষ্ণুর্বিষ্ণুঃ। ওঁ নমঃ পরমাত্মনে, শ্রীপুরাণপুরুষোত্তমস্য
(১) এখানে সংক্ষিপ্তরূপে পাঠবিধি দেওয়া হল। নবরাত্রি ইত্যাদি বিশেষ অনুষ্ঠানে অথবা শতচণ্ডীপাঠ অনুষ্ঠানে এই নিয়ম বিস্তারিতভাবে পালন করা হয়। তখন যন্ত্রস্থ কলস, গণেশ, নবগ্রহ, মাতৃকা, বাস্তু, সপ্তর্ষি, সপ্তচিরঞ্জীব, ৬৪ যোগিনী, ৫০ ক্ষেত্রপাল এবং অন্যান্য দেবতাদের বৈদিক নিয়মে পূজা করা হয়। অক্ষয় প্রদীপেরও ব্যবস্থা থাকে। দেবীর অঙ্গন্যাস ও অগ্ন্যুত্তারণ ইত্যাদি নিয়ম অনুসারে শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী পূজা করা হয়। নবদুর্গাপূজা, জ্যোতিঃপূজা, বটুক- গণেশাদিসহ কুমারীপূজা, অভিষেক, নান্দীশ্রাদ্ধ, রক্ষাবন্ধন, পুণ্যাহবাচন, মঙ্গলপাঠ, গুরুপূজা, তীর্থ আবাহন, মন্ত্রস্নান ইত্যাদি, আসনশুদ্ধি, প্রাণায়াম, ভূতশুদ্ধি, প্রাণপ্রতিষ্ঠা, অন্তর্মাতৃকান্যাস, বহির্মাতৃকান্যাস, সৃষ্টিন্যাস, স্থিতিন্যাস, শক্তিকলান্যাস, শিবকলান্যাস, হৃদয়াদিন্যাস, ষোঢ়ান্যাস, বিলোমন্যাস, তত্ত্বন্যাস, অক্ষরন্যাস, ব্যাপকন্যাস, ধ্যান, পীঠপূজা, বিশেষার্ঘ্য, ক্ষেত্রকীলন, মন্ত্রপূজা, বিবিধ মুদ্রাবিধি, আবরণ পূজা এবং প্রধান পূজা ইত্যাদি শাস্ত্রীয় মতে অনুষ্ঠান করা হয়। এইরকম বিস্তৃতরীতিতে পূজা করিতে ইচ্ছুক ভক্তের অন্যান্য পূজাপদ্ধতি পুস্তকের সাহায্য নিয়ে ভগবতীর আরাধনা করে পাঠ আরম্ভ করবে।
শ্রীবিষ্ণোরাজ্ঞয়া প্রবর্তমানস্যাদ্য শ্রীব্রহ্মণো দ্বিতীয়পরার্দ্ধে শ্রীশ্বেতবারাহকল্পে বৈবস্বতমন্বন্তরেহষ্টাবিংশতিতমে কলিযুগে প্রথমচরণে জম্বুদ্বীপে ভারতবর্ষে ভরতখণ্ডে আর্যাবর্তান্তর্গব্রহ্মাবর্তৈকদেশে পুণ্যপ্রদেশে বৌদ্ধাবতারে বর্তমানে যথানামসংবৎসরে অমুকায়নে মহামাঙ্গল্যপ্রদে মাসানাম্ উত্তমে অমুকমাসে অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ অমুকবাসরান্বিতায়াম্ অমুকনক্ষত্রে অমুকরাশিস্থিতে সূর্যে অমুকামুকরাশিস্থিতেষু চন্দ্রভৌমবুধগুরুশুক্রশনিষু সৎসু শুভে যোগে শুভকরণে এবংগুণবিশেষণবিশিষ্টায়াং শুভপুণ্যতিথৌ সকলশাস্ত্রশ্রুতিস্মৃতি-পুরাণোক্তফলপ্রাপ্তিকামঃ অমুকগোত্রোৎপন্নঃ অমুকশর্মা অহং মমাত্মনঃ সপুত্রস্ত্রীবান্ধবস্য শ্রীনবদুর্গানুগ্রহতো গ্রহকৃতরাজকৃতসর্ববিধপীডানিবৃত্তিপূর্বকং নৈরুজ্যদীর্ঘায়ুঃ পুষ্টিধনধান্য- সমৃদ্ধ্যর্থং শ্রীনবদুর্গাপ্রসাদেন সর্বাপন্নিবৃত্তিসর্বাভীষ্টফলাবাপ্তি- ধর্মার্থকামমোক্ষচতুর্বিধপুরুষার্থসিদ্ধিদ্বারা শ্রীমহাকালীমহালক্ষ্মী মহাসরস্বতী- দেবতাপ্রীত্যর্থং শাপোদ্ধারপুরসুরং কবচার্গলাকীলকপাঠবেদ- তন্ত্রোক্তরাত্রিসূক্তপাঠদেব্যথর্বশীর্ষপাঠন্যাসবিধিসহিতনবার্ণজপসপ্তশতীন্যাসধ্যান সহিতচরিত্রসম্বন্ধিবিনিয়োগন্যাসধ্যানপূর্বকং চ 'মার্কণ্ডেয় উবাচ।। সাবর্ণিঃ সূর্যতনয়ো যো মনুঃ কথ্যতেহষ্টমঃ।' ইত্যাদ্যারভ্য 'সাবর্ণির্ভবিতা মনুঃ' ইত্যন্তং দুর্গাসপ্তশতীপাঠং (চণ্ডীপাঠং) তদন্তে ন্যাসবিধিসহিতনবার্ণমন্ত্রজপং বেদতন্ত্রোক্তদেবীসূক্তপাঠং রহস্যত্রয়পঠনং শাপোদ্ধারাদিকং চ করিষ্যে।
এইভাবে সঙ্কল্প করে দেবীর ধ্যান করে পঞ্চোপচারে পুস্তকের পূজা(১) করা, যোনিমুদ্রা প্রদর্শন করে ভগবতীকে প্রণাম করা, তারপর মূল নবার্ণমন্ত্রে পীঠাদিতে আধারশক্তিকে স্থাপনা করে পুস্তককে সেই আধারের ওপর রাখতে হয় ।
(১) পুস্তকপূজার মন্ত্র এরূপ
ওঁ নমো দেব্যৈ মহাদেব্যৈ শিবায়ৈ সততং নমঃ।
নমঃ প্রকৃত্যৈ ভদ্রায়ৈ নিয়তাঃ প্রণতাঃ স্ম তাম্।
(বারাহীতন্ত্র এবং চিদম্বরসংহিতা)
(২) ধ্যাত্বা দেবীং পঞ্চপূজাং কৃত্বা যোন্যা প্রণম্য চ।
আধারং স্থাপ্য মূলেন স্থাপয়েত্তত্র পুস্তকম্ ।।
এরপর শাপোদ্ধার(১) করা প্রয়োজন, এর অনেক প্রকার-ভেদ আছে। 'এ হ্রীং ক্লীং শ্রীং ক্রাং ক্রীং চণ্ডিকাদেব্যৈ শাপনাশানুগ্রহং কুরু কুরু স্বাহা'-এই মন্ত্র প্রথমে ও শেষে সাতবার জপ করতে হয়। একে শাপোদ্ধারমন্ত্র বলা হয়। এরপর উৎকীলন মন্ত্র জপ করা হয়। এই মন্ত্রের জপ আদি ও অন্তে একুশ বার করে করা দরকার। এই মন্ত্র হল- 'ওঁ শ্রীং ক্লীং হ্রীং সপ্তশতি চণ্ডিকে উৎকীলনং কুরু কুরু স্বাহা।' এই জপের পরে আদি এবং অন্তে সাতবার করে মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা জপ করা দরকার, যা এরূপ- 'ওঁ হ্রীং হ্রীং বং বং ঐং ঐং মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যে মৃতমুত্থাপয়োত্থাপয় ক্রীং হ্রীং হ্রীং বং স্বাহা।' মারীচকল্পের
(১) 'সপ্তশতী-সর্বস্ব' বর্ণিত উপাসনার ক্রম অনুসারে প্রথমে শাপোদ্ধার করে তারপর ষড়ঙ্গসহিত পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। তারপর কবচাদি পাঠ করে প্রথমেই শাপোদ্ধার করে নেওয়া উচিত। কাত্যায়নী-তন্ত্রে শাপোদ্ধার তথা উৎকীলনের অন্যরকম ক্রম বলা হয়েছে- 'অন্ত্যাদ্যার্কদ্বিরুদ্রত্রিদিগন্ধ্যঙ্কেম্বিভর্তবঃ। অশ্বোহশ্ব ইতি সর্গাণাং শাপোদ্ধারে মনোঃ ক্রমঃ।।' 'উৎকীলনে চরিত্রাণাং মধ্যাদ্যন্তমিতি ক্রমঃ।' অর্থাৎ সপ্তশতীর অধ্যায়ের তের একবার, বার দুইবার, এগার-তিনবার, দশ-চারবার, নয় পাঁচবার তথা আট-ছয়বার ক্রমে পাঠ করে শেষে সপ্তম অধ্যায়কে দুবার পাঠ করা উচিত। একে বলে শাপোদ্ধার এবং প্রথমে মধ্যম চরিত্র, তারপর প্রথম চরিত্র, তারপর উত্তর চরিত্র পাঠ করাকে উৎকীলন বলে। কিছু মতানুসারে কীলকে যে রকম বলা আছে সেই অনুসারে 'দদাতি প্রতিগৃহ্বাতি' নিয়মঅনুযায়ী কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী বা চতুর্দশী তিথিতে দেবীকে সর্বস্ব সমর্পণ করে তাঁর হয়ে তাঁর প্রসাদরূপে প্রত্যেক জিনিষের ব্যবহারই শাপোদ্ধার এবং উৎকীলন। কেউ কেউ বলেন যে, ছয় অঙ্গসহিত পাঠ করাই শাপোদ্ধার। অঙ্গের ত্যাগ বা বাদ দেওয়াই শাপ। আবার পণ্ডিতদের এক অংশের মতে শাপোদ্ধার কর্ম অনিবার্য অর্থাৎ আবশ্যক নয়, কারণ রহস্যাধ্যায়ে পরিষ্কারভাবে বলা আছে যে, যার পক্ষে একই দিনে সম্পূর্ণ পাঠ করা সম্ভব না হয় সে একদিন কেবল মধ্যম চরিত্র এবং পরের দিন শেষ দুটো চরিত্র পাঠ করবে। এছাড়া যে প্রতিদিন নিয়মিত পাঠ করে তার পক্ষে একদিনে সম্পূর্ণ পাঠ করতে না পারলে প্রথম, দ্বিতীয়, প্রথম, চতুর্থ, দ্বিতীয়, প্রথম এবং দ্বিতীয় অধ্যায় ক্রম অনুসারে সাত দিনে পাঠ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ আছে। এই অবস্থায় প্রতিদিন শাপোদ্ধার এবং কীলক কী করে সম্ভব হবে? তবে যাই হোক, জিজ্ঞাসুদের জ্ঞাতার্থে এখানে শাপোদ্ধার ও উৎকীলন দুইয়েরই বিধান দেওয়া হয়েছে।
মতে সপ্তশতী (শ্রীশ্রীচণ্ডী) শাপবিমোচন মন্ত্র এইরকম 'ওঁ শ্রীং শ্রীং ক্লীং হং ওঁ ঐং ক্ষোভয় মোহয় উৎকীলয় উৎকীলয় উৎকীলয় ঠং ঠং।' পাঠের পূর্বেই এই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করা উচিত, পাঠের শেষে নয়। অথবা রুদ্রযামল মহামন্ত্রের অন্তর্গত দুর্গাকল্পে লিখিত চণ্ডিকা-শাপ-বিমোচন মন্ত্র পাঠের আগেই জপ করা দরকার। এই মন্ত্র এইপ্রকার-
ওঁ অস্য শ্রীচণ্ডিকায়া ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপবিমোচনমন্ত্রস্য বসিষ্ঠনারদসংবাদ-সামবেদাধিপতিব্রহ্মাণ ঋষয়ঃ সর্বৈশ্বর্যকারিণী শ্রীদুর্গা দেবতা চরিত্রত্রয়ং বীজং হ্রীং শক্তিঃ ত্রিগুণাত্মস্বরূপচণ্ডিকাশাপবিমুক্তৌ মম সঙ্কল্পিতকার্যসিদ্ধ্যর্থে জপে বিনিয়োগঃ।
ওঁ (হ্রীং) রীং রেতঃস্বরূপিণ্যৈ মধুকৈটভমর্দিন্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ্ বিমুক্তা ভব৷৷ ১ ৷৷ ওঁ শ্রীং বুদ্ধিস্বরূপিণ্যৈ মহিষাসুরসৈন্যনাশিন্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠ- বিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব। ২ ৷৷ ওঁ রং রক্তস্বরূপিণ্যৈ মহিষাসুরমর্দিন্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব৷৷ ৩ ৷৷ ওঁ ক্ষুং ক্ষুধাস্বরূপিণ্যৈ দেববন্দিতায়ৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব। ৪ ৷৷ ওঁ ছাং হায়াস্বরূপিণ্যৈ দূতসংবাদিন্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব।। ৫ ৷৷ ওঁ শং শক্তিস্বরূপিণ্যৈ ধূম্রলোচনঘাতিন্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব।। ৬ ৷৷ ওঁ তৃং তৃষাস্বরূপিণ্যে চণ্ডমুণ্ডবধকারিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ্ বিমুক্তা ভব। ৭৷ ওঁ ক্ষাং ক্ষান্তিস্বরূপিণ্যৈ রক্তবীজবধকারিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ্ বিমুক্তা ভব। ৮ ৷৷ ওঁ জাং জাতিস্বরূপিণ্যৈ নিশুম্ভবধকারিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব৷ ৯ ৷৷ ওঁ লং লজ্জাস্বরূপিণ্যৈ শুম্ভবধকারিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব।। ১০ ৷৷ ওঁ শাং শান্তিস্বরূপিণ্যৈ দেবস্তুত্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ্ বিমুক্তা ভব। ১১ ৷ ওঁ শ্রং শ্রদ্ধাস্বরূপিণ্যে সকলফলদাত্র্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব৷৷ ১২ ৷৷ ওঁ কাং কান্তিস্বরূপিণ্যে রাজবরপ্রদায়ৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব৷ ১৩ ৷৷ ওঁ মাং মাতৃস্বরূপিণ্যৈ অনর্গল-মহিমসহিতায়ৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব। ১৪ ৷ ওঁ হ্রীং শ্রীং দুং দুর্গায়ৈ সং সর্বৈশ্বর্যকারিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব। ১৫ ৷ ওঁ ঐং হ্রীং ক্লীং নমঃ শিবায়ৈ অভেদ্যকবচস্বরূপিণ্যৈ ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাদ বিমুক্তা ভব৷৷ ১৬ ৷৷ ওঁ ক্রীং কাল্যৈ কালি হ্রীং ফট্ স্বাহায়ৈ ঋগ্বেদস্বরূপিণ্য ব্রহ্মবসিষ্ঠবিশ্বামিত্রশাপাল্ বিমুক্তা ভব৷৷ ১৭ ৷৷ ওঁ ঐং হ্রীং ক্লীং মহাকালীমহালক্ষ্মীমহাসরস্বতীস্বরূপিণ্যে ত্রিগুণাত্মিকায়ৈ দুর্গাদেব্যৈ নমঃ ।। ১৮ ৷৷
ইত্যেবং হি মহামন্ত্রান্ পঠিত্বা পরমেশ্বর।
চণ্ডীপাঠং দিবা রাত্রৌ কুর্যাদেব ন সংশয়ঃ। ১৯ ৷
এবং মন্ত্রং ন জানাতি চণ্ডীপাঠং করোতি যঃ।
আত্মানং চৈব দাতারং ক্ষীণং কুর্যান্ন সংশয়ঃ ৷৷ ২০৷৷
এইভাবে শাপোদ্ধার করে তারপর অন্তর্মাতৃকা ও বহির্মাতৃকা ন্যাসাদি করে শ্রীদেবীর ধ্যানান্তে নয়টি কোষ্ঠযুক্ত যন্ত্রে মহালক্ষ্মী আদির পূজা, তারপর ছয় দুর্গাসপ্তশতীর পাঠ আরম্ভ করা হয়। কবচ, অর্গলা, কীলক এবং তিনটা রহস্য-এদেরও সপ্তশতীর ছয় অঙ্গরূপে মান্য করা হয়। এই ক্রমে মতভেদ আছে। চিদম্বরসংহিতায় প্রথমে অর্গলা, তারপর কীলক এবং শেষে কবচ পাঠের বিধি আছে(১)। কিন্তু যোগরত্নাবলীতে পাঠের ক্রম আবার অন্য রকম। সেখানে কবচের বীজ, অর্গলার শক্তি, কীলকের কীলক সংজ্ঞা বলা আছে। সমস্ত মন্ত্রেই যেমন প্রথমে বীজের, তারপরে শক্তির এবং শেষে কীলকের উচ্চারণ হয়, সেইরকম এখানেও প্রথমে কবচরূপ বীজের, তারপর অর্গলারূপা শক্তির এবং শেষে কীলকরূপ কীলকের ক্রমশঃ পাঠ হওয়া উচিত (২)। বক্ষ্যমাণ পুস্তকে এই ক্রমেরই অনুসরণ করা হয়েছে।
__________________________________________________________________________________
(১) অর্গলং কীলকং চাদৌ পঠিত্বা কবচং পঠেৎ।
জপ্যা সপ্তশতী পশ্চাৎ সিদ্ধিকামেন মন্ত্রিণা।।
(২) কবচং বীজমাদিষ্টমর্গলা শক্তিরুচ্যতে।
কীলকং কীলকং প্রাহুঃ সপ্তশত্যা মহামনোঃ।।
যথা সর্বমন্ত্রেষু বীজশক্তিকীলকানাং প্রথমমুচ্চারণং তথা সপ্তশতীপাঠেহপি কবচার্গলাকীলকানাং প্রথমং পাঠঃ স্যাৎ।
এই রকম অনেক তন্ত্র অনুসারে সপ্তশতীর পাঠের ক্রম অনেক রকম বর্ণিত আছে। সেই অবস্থায় নিজ নিজ সম্প্রদায়ে পাঠের যে ক্রম পূর্বপরম্পরায় প্রচলিত আছে, সেই অনুযায়ী পাঠ করাই শ্রেয়।