অথ নবমোহধ্যায়ঃ
নবম অধ্যায়
নিশুম্ভ-বধ
ধ্যানম্
ওঁ বন্ধুককাঞ্চননিভং রুচিরাক্ষমালাং পাশাঙ্কুশৌ চ বরদাং নিজবাহুদণ্ডৈঃ।
বিভ্রাণমিন্দু-শকলাভরণং ত্রিনেত্রম্ অর্ধান্বিকেশমনিশং বপুরাশ্রয়ামি।।
অর্দ্ধ অম্বিকা ও অর্দ্ধ মহেশ্বর-এই মিলিত অর্দ্ধাম্বিকেশ্বরমূর্তিতে বিরাজিতা জগদম্বার শ্রীবিগ্রহকে আমি নিরন্তর আশ্রয় করি। তাঁর বর্ণ বন্ধুকপুষ্প ও সুবর্ণের মতো রক্তপীতমিশ্রিত। তাঁর চার হাতে সুন্দর রুদ্রাক্ষমালা, পাশ, অঙ্কুশ ও বরদমুদ্রা ধারণ করা রয়েছে; অর্দ্ধচন্দ্র তাঁর আভূষণ এবং তিনি ত্রিনয়না।
'ওঁ' রাজোবাচ ।। ১ ৷৷
সুরথ রাজা বললেন-৷৷ ১ ।
বিচিত্রমিদমাখ্যাতং ভগবন্ ভবতা মম।
দেব্যাশ্চরিতমাহাত্ম্যং রক্তবীজবধাশ্রিতম্।। ২৷৷
হে ভগবন্! আপনি রক্তবীজের বধ সম্পর্কিত দেবীচরিত্রের অদ্ভুত মাহাত্ম্য আমাকে বললেন। ২ ।।
ভূয়শ্চেচ্ছাম্যহং শ্রোতুং রক্তবীজে নিপাতিতে।
চকার শুম্ভো যৎ কর্ম নিশুম্ভশ্চাতিকোপনঃ ৷৷ ৩৷৷
এবার রক্তবীজ বধ হয়ে যাবার পর অতিশয় ক্রুদ্ধ শুম্ভ ও নিশুম্ভ যা করেছিল, আমি সে সব আরও শুনতে ইচ্ছা করি।। ৩ ।।
ঋষিরুবাচ।। ৪।।
মেধা ঋষি বললেন-॥৪॥
চকার কোপমতুলং রক্তবীজে নিপাতিতে।
শুম্ভাসুরো নিশুম্ভশ্চ হতেম্বন্যেষু চাহবে।। ৫।।
যুদ্ধে রক্তবীজ ও অন্যান্য দৈত্যগণ বধ হয়ে গেলে শুম্ভ ও নিশুন্তের ক্রোধ সীমা ছাড়িয়ে গেল। ৫ ।
হন্যমানং মহাসৈন্যং বিলোক্যামর্ষমুদ্বহন্।
অভ্যধাবন্নিশুম্ভোহথ মুখ্যয়াসুরসেনয়া।। ৬।
নিজেদের বিশাল সৈন্যবাহিনী এইভাবে বধ হতে দেখে নিশুম্ভ ক্রোধে অধীর হয়ে দেবীর দিকে ধেয়ে গেল। প্রধান প্রধান অসুর সেনাপতিরাও তার সাথে গেল। ৬ ।।
তস্যাগ্রতন্তথা পৃষ্ঠে পার্শ্বয়োশ্চ মহাসুরাঃ।
সন্দষ্টৌষ্ঠপুটাঃ ক্রুদ্ধা হন্তং দেবীমুপাযযুঃ ।। ৭ ৷৷
তার সামনে-পেছনে এবং দুপাশে অবস্থিত মহাসুরগণ ক্রোধে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে দেবীকে বধ করবার জন্য উপস্থিত হল ।। ৭ ।।
আজগাম মহাবীর্যঃ শুম্ভোহপি স্ববলৈবৃতঃ।
নিহন্তুং চণ্ডিকাং কোপাৎ কৃত্বা যুদ্ধপ্ত মাতৃভিঃ৷৷ ৮ ৷৷
মহাপরাক্রমী শুম্ভও নিজের সৈন্যদলে বেষ্টিত হয়ে মাতৃগণের সাথে যুদ্ধ করে ক্রোধে চণ্ডিকাকে বধ করতে এল। ৮ ৷৷
ততো যুদ্ধমতীবাসীদ্ দেব্যা শুম্ভনিশুম্ভয়োঃ।
শরবর্ষমতীবোগ্রং মেঘয়োরিব বর্ষতোঃ। ৯ ৷৷
তখন দেবীর সাথে শুম্ভ ও নিশুম্ভর ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হল। এই দুই মহাসুর মেঘের জল বর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর বাণবৃষ্টি করতে লাগল। ৯ ৷৷
চিচ্ছেদাস্তাঞ্ছরাংস্তাভ্যাং চণ্ডিকা স্বা শরোৎকরৈঃ।
তাড়য়ামাস চাঙ্গেযু শস্ত্রেীঘৈরসুরেশ্বরৌ।। ১০৷৷
তাদের নিক্ষিপ্ত বাণগুলি নিজের বাণ দিয়ে সাথে সাথেই দেবী কেটে দিলেন এবং শস্ত্রসমূহ বর্ষণ করে ওই দুই অসুররাজের সর্বাঙ্গে আঘাত করলেন।। ১০ ।।
নিশুন্তো নিশিতং খড়াং চর্ম চাদায় সুপ্রভম্।
অতাড়য়মূর্ষি সিংহং দেব্যা বাহনমুত্তমম্ ৷৷ ১১৷৷
নিশুম্ভ শাণিত খড়া এবং উজ্জ্বল ঢাল নিয়ে দেবীর শ্রেষ্ঠ বাহন সিংহের মাথায় আঘাত করল। ১১ ।।
তাড়িতে বাহনে দেবী খুরপ্রেণাসিমুত্তমম্।
নিশুম্ভস্যাক্ত চিচ্ছেদ চর্ম চাপ্যষ্টচন্দ্রকম্৷ ১২৷৷
নিজের বাহনকে আহত হতে দেখে দেবী ক্ষুরপ্র নামক বাণ দিয়ে নিশুম্ভের উৎকৃষ্ট তলোয়ারটী তৎক্ষণাৎ কেটে দিলেন এবং তার অষ্টচন্দ্রযুক্ত ঢালটাও খণ্ড খণ্ড করে দিলেন৷৷ ১২ ৷
ছিন্নে চর্মণি খড়ো চ শক্তিং চিক্ষেপ সোহসুরঃ।
তামপ্যস্য দ্বিধা চক্রে চক্রেণাভিমুখাগতাম্৷৷ ১৩৷৷
ঢাল এবং তলোয়ার কাটা যাওয়াতে সেই অসুর শক্তিঅস্ত্র নিক্ষেপ করল। কিন্তু নিক্ষিপ্ত সেই শক্তিঅস্ত্র দেবী চক্র দ্বারা দুই টুকরো করে দিলেন৷৷ ১৩ ৷৷
কোপাদ্মাতো নিশুম্ভোহথ শূলং জগ্রাহ দানবঃ।
আয়াতং মুষ্টিপাতেন দেবী তচ্চাপ্যচূর্ণয়ৎ৷৷ ১৪৷৷
তখন নিশুম্ভ ক্রোধে জ্বলে উঠল এবং দেবীকে মারবার জন্য শূল হাতে নিল; কিন্তু সেই শূল উড়ে আসবার পথেই মুষ্টির আঘাতে দেবী সেটিকে চূর্ণ করে দিলেন। ১৪ ।
আবিধ্যাথা গদাং সোহপি চিক্ষেপ চণ্ডিকাং প্রতি।
সাপি দেব্যা ত্রিশূলেন ভিন্না ভস্মত্বমাগতা৷৷ ১৫ ৷৷
নিশুম্ভ তখন গদা ঘুরিয়ে চণ্ডিকা দেবীর দিকে ছুঁড়ে মারল। কিন্তু সেই গদাও দেবীর ত্রিশূলের আঘাতে ভেঙে ভস্ম হয়ে গেল ৷৷ ১৫ ৷৷
পরশুহস্তং তমায়ান্তং দৈত্যপুঙ্গবম্।
ততঃ আহত্য দেবী বাণৌঘৈরপাতয়ত ভূতলে৷৷ ১৬৷৷
তদনন্তর কুঠার হাতে দৈত্যরাজ নিশুম্ভকে আসতে দেখে দেবী তাকে বাণসমূহদ্বারা আঘাত করে মাটীতে ফেলে দিলেন৷৷ ১৬ ৷৷
তস্মিন্নিপতিতে ভূমৌ নিশুন্তে ভীমবিক্রমে।
ভ্রাতর্যতীব সংক্রুদ্ধঃ প্রযযৌ হন্ত্রমম্বিকাম্।। ১৭৷৷
ভীমবিক্রম ভাই নিশুম্ভকে ধরাশায়ী হতে দেখে শুম্ভাসুর ভীষণ ক্রুদ্ধ হল এবং অগ্নিকাকে বধ করবার উদ্দেশ্যে ছুটে গেল।। ১৭ ।।
স রথস্থস্তথাত্যুচ্চৈগৃহীতপরমায়ুধৈঃ।
ভুজৈরষ্টাভিরতুলৈব্যাপ্যাশেষং বভৌ নভঃ৷৷ ১৮৷৷
রথারূঢ় হয়ে পরম উত্তম আয়ুধে সুশোভিত হয়ে নিজের বিশাল অনুপম আর্টটা হাত দিয়ে সমস্ত আকাশ ছেয়ে ফেলে শুম্ভ অদ্ভুত শোভা পেতে লাগল। ১৮ ৷৷
তমায়ান্তং সমালোক্য দেবী শঙ্খমবাদয়ৎ।
জ্যাশব্দঞ্চাপি ধনুষশ্চকারাতীব দুঃসহম্৷৷ ১৯৷৷
শুম্ভকে আসতে দেখে দেবী চণ্ডিকা শঙ্খনিনাদ এবং অতীব অসহনীয় ধনুষ্টঙ্কার করলেন ৷৷ ১৯ ।।
পূরয়ামাস ককুভো নিজঘণ্টাস্বনেন চ।
সমস্তদৈত্যসৈন্যানাং তেজোবধবিধায়িনা।। ২০৷
সঙ্গে সঙ্গে অসুরসৈন্যের তেজনাশক নিজের ঘন্টার শব্দে দশদিক পরিপূর্ণ করলেন। ২০ ।।
ততঃ সিংহো মহানাদৈস্ত্যাজিতেভমহামদৈঃ।
পূরয়ামাস গগনং গাং তথৈব দিশো দশ। ২১।
অনন্তর দেবীবাহন সিংহও মহামদমত্ত গজরাজদের মদস্রাবনিবারক বিষম গর্জন দ্বারা আকাশ, পৃথিবী ও যুদ্ধক্ষেত্রের দশদিক পূর্ণ করল। ২১ ॥
ততঃ কালী সমুৎপত্য গগনং ক্ষামতাড়য়ৎ।
করাভ্যাং তন্নিনাদেন প্রান্ত্বনান্তে তিরোহিতাঃ। ২২ ॥
তখন কালী উল্লম্ফনে আকাশে উঠে নিজের দুটী হাত দিয়ে ভূমিতে আঘাত করলেন। সেই ভয়ঙ্কর শব্দে আগের সব শব্দ চাপা পড়ে গেল। ২২ ৷৷
অট্টাট্টহাসমশিবং শিবদূতী চকার হ।
তৈঃ শব্দেরসুরাস্ত্রেসুঃ শুম্ভঃ কোপং পরং যযৌ ।। ২৩৷৷
তারপর শিবদূতী দৈত্যদের পক্ষে মহাঅমঙ্গলজনক ভয়ানক অট্টহাস্য করলেন; সেই শব্দে অসুরদল আতঙ্কগ্রস্ত এবং শুম্ভ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হল। ২৩ ৷৷
দুরাত্মংস্তিষ্ঠ তিষ্ঠেতি ব্যাজহারাম্বিকা যদা।
তদা জয়েত্যভিহিতং দেবৈরাকাশসংহিতৈঃ।। ২৪৷৷
সেই সময় যখন দেবী শুম্ভকে লক্ষ্য করে বললেন- 'রে দুরাত্মা, থাম, থাম', তখন দেবতারা আকাশ থেকে জয়ধ্বনি করলেন। ২৪ ৷৷
শুন্তেনাগত্য যা শক্তিমুক্তা জ্বালাতিভীষণা।
আয়ান্তী বহ্নিকূটাভা সা নিরস্তা মহোল্কয়া। ২৫৷৷
শুম্ভ সেই রণস্থলে এসে ভীষণ তেজবিশিষ্ট ভয়ানক শক্তি অস্ত্র নিক্ষেপ করল। আগুনের পাহাড়ের মতো সেই শক্তি অস্ত্র আসতে আসতে দেবীর মহোল্কা (মহা উল্কা) নামক অস্ত্র দ্বারা বিনষ্ট হল৷৷ ২৫ ॥
সিংহনাদেন শুম্ভস্য ব্যাপ্তং লোকত্রয়ান্তরম্।
নির্ঘাতনিঃস্বনো ঘোরো জিতবানবনীপতে৷৷ ২৬৷৷
সেই সময় শুম্ভের সিংহনাদে ত্রিভুবন ছেয়ে গেল। হে রাজন! সেই সিংহনাদের প্রতিধ্বনিতে বজ্রপাতের মত ভয়ানক শব্দ হল আর সেই শব্দে অন্য সব শব্দ স্তব্ধ হয়ে গেল। ২৬ ।।
শুম্ভমুক্তাঞ্ছরান্ দেবী শুম্ভস্তৎপ্রহিতাঞ্ছরান্।
চিচ্ছেদ স্বশরৈরুগ্রৈঃ শতশোহথ সহস্রশঃ। ২৭৷৷
শুন্তের দ্বারা নিক্ষিপ্ত বাণগুলি দেবী আর দেবীর ছোঁড়া বাণগুলি শুম্ভ নিজেদের ভয়ানক ভয়ানক বাণ দ্বারা শত সহস্র টুকরো করে দিল। ২৭ ॥
ততঃ সা চণ্ডিকা ক্রুদ্ধা শূলেনাভিজঘান তম্।
স তদাভিহতো ভূমৌ মূর্ছিতো নিপপাত হ৷৷ ২৮॥
তখন ক্রুদ্ধা হয়ে চণ্ডিকা শুম্ভকে শূল দ্বারা আঘাত করলেন। সেই আঘাতে শুম্ভ মূর্ছিত হয়ে মাটীতে লুটিয়ে পড়ল। ২৮৷
ততো নিশুম্ভঃ সংপ্রাপ্য চেতনামাত্তকামুকঃ।
আজঘান শরৈদেবীং কালীং কেশরিণং তথা। ২৯৷৷
ইতিমধ্যে নিশুন্তের জ্ঞান ফিরে এল এবং সে ধনুক হাতে নিয়ে বাণ দিয়ে দেবী, কালী ও সিংহকে আঘাত করতে লাগল । ২৯ ৷৷
পুনশ্চ কৃত্বা বাহুনামযুতং দনুজেশ্বরঃ।
চক্রায়ুধেন দিতিজহাদয়ামাস চণ্ডিকাম্৷ ৩০৷৷
এরপর সেই দৈত্যরাজ দশ হাজার বাহু বিস্তার করে চক্র দ্বারা চণ্ডিকাকে ঢেকে ফেলল। ৩০ ।।
ততো ভগবতী ক্রুদ্ধা দুর্গা দুর্গার্তিনাশিনী।
চিচ্ছেদ তানি চক্রাণি স্বশরৈঃ সায়কাংশ্চ তান্৷ ৩১৷৷
তদনন্তর দুঃসহপীড়াহারিণী ভগবতী দুর্গা কুপিতা হয়ে নিশুন্তের দ্বারা নিক্ষিপ্ত চক্র এবং বাণ নিজের বাণ দিয়ে কেটে ফেললেন। ৩১ ।।
ততো নিশুম্ভো বেগেন গদামাদায় চণ্ডিকাম্।
অভ্যধাবত বৈ হস্তুং দৈত্যসেনাসমাবৃতঃ৷৷ ৩২ ৷৷
এই অবস্থা দেখে নিশুম্ভ দৈত্যসেনাদের নিয়ে চণ্ডিকাকে বধ করার উদ্দেশ্যে গদা হাতে নিয়ে তীব্র বেগে ধেয়ে গেল। ৩২ ।।
তস্যাপতত এবাশু গদাং চিচ্ছেদ চণ্ডিকা।
খড়োন শিতধারেণ স চ শূলং সমাদদে।। ৩৩ ৷৷
সে যখন সামনে এসে পড়ল, তখন তীক্ষ্ণ শাণিত খড়া দিয়ে শীঘ্রই দেবী সেই গদাকে ছেদন করলেন। নিশুম্ভ তখন শূল হাতে নিল।। ৩৩ ।।
শূলহস্তং সমায়ান্তং নিশুম্ভমমরাদনম্।
হৃদি বিব্যাধ শূলেন বেগাবিন্ধেন চণ্ডিকা। ৩৪ ॥
দেবশত্রু নিশুম্ভকে শূল হাতে আসতে দেখে চণ্ডিকা একটী শূল অতিবেগে ঘুরিয়ে নিক্ষেপ করে নিশুম্ভের বক্ষঃস্থল বিদীর্ণ করে দিলেন ।। ৩৪ ।।
ভিন্নস্য তস্য শূলেন হৃদয়ান্নিঃসৃতোহপরঃ।
মহাবলো মহাবীর্যস্তিষ্ঠেতি পুরুষো বদন্৷ ৩৫৷৷
নিশুম্ভের শূলবিদ্ধ বুক থেকে মহাবল মহাবীর্য অন্য একটা পুরুষ 'দাঁড়াও, দাঁড়াও' বলতে বলতে বেরিয়ে এল।। ৩৫ ৷৷
তস্য নিষ্কামতো দেবী প্রহস্য স্বনবৎ ততঃ।
শিরশ্চিচ্ছেদ খড়োন ততোহসাবপতদ্ ভুবি৷৷ ৩৬ ৷৷
সেই পুরুষ বের হবার সময় তার আওয়াজ শুনে দেবী অট্টহাস্য করে খড়া দিয়ে তার মাথা কেটে ফেললেন। সে তখন মাটীতে লুটিয়ে পড়ল। ৩৬ ।।
ততঃ সিংহশ্চখাদোগ্রং দংষ্ট্রাক্ষুণ্ণশিরোধরান্।
অসুরাংস্তাংস্তথা কালী শিবদূতী তথাপরান্।। ৩৭ ॥
তারপর সিংহ তার ধারাল দাঁত দিয়ে অসুরদের ঘাড় ভেঙে মাংস খেতে লাগল। সে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। ওদিকে কালী তথা শিবদূতী ও অন্যান্য অসুরদের ভক্ষণ করতে শুরু করলেন। ৩৭ ॥
কৌমারীশক্তিনির্ভিন্নাঃ কেচিন্নেশুর্মহাসুরাঃ।
ব্রহ্মাণীমন্ত্রপূতেন তোয়েনান্যে নিরাকৃতাঃ।। ৩৮ ।।
কৌমারীর শক্তিঅস্ত্রে বিদীর্ণ হয়ে অন্যান্য মহাসুররা বিনষ্ট হয়ে গেল এবং ব্রহ্মাণীর মন্ত্রপূত জলের দ্বারা নির্বীর্য হয়ে মৃত্যুমুখে পড়ল। ৩৮ ।।
মাহেশ্বরীত্রিশূলেন ভিন্নাঃ পেতুস্তথাপরে।
বারাহীতুগুঘাতেন কেচিচূর্ণীকৃতা ভুবি। ৩৯ ৷৷
অপর অনেকে মাহেশ্বরীর ত্রিশূলের আঘাতে ধরাশায়ী হল এবং বারাহীশক্তির মুখের আঘাতে চূর্ণ হয়ে ভূতলে পতিত হল।। ৩৯ ।।
খণ্ডং খণ্ডঞ্চ চক্রেণ বৈষ্ণব্যা দানবাঃ কৃতাঃ।
বজ্রেণ চৈন্দ্রীহস্তাগ্রবিমুক্তেন তথাপরে। ৪০।।
বৈষ্ণবীও তাঁর চক্র দিয়ে দানবদের টুকরো টুকরো করতে লাগলেন। ঐন্দ্রীর নিক্ষিপ্ত বজ্রের আঘাতেও কত কত অসুর খণ্ড খণ্ড হয়ে গেল। ৪০ ।
কেচিদিনেশুরসুরাঃ কেচিন্নষ্টা মহাহবাৎ।
ভক্ষিতাশ্চাপরে কালীশিবদূতীমৃগাধিপৈঃ ৷৷ ওঁ ৷৷ ৪১ ৷৷
কিছু অসুর শেষ হয়ে গেল, মহাযুদ্ধ থেকে অনেক অসুর পালিয়ে গেল এবং আরও কত অসুরকে কালী, শিবদূতী ও সিংহ খেয়ে ফেললেন। ৪১ ৷৷
ইতি শ্রীমার্কেণ্ডয় পুরাণে সাবর্ণিকে মন্বন্তরে দেবীমাহাত্ম্যে নিশুম্ভবধো নাম নবমোহধ্যায়ঃ ।। ৯ ।।
এই অধ্যায়ে উবাচ-২, শ্লোক ৩৯, মোট ৪১ আদি হতে সর্বমোট ৫৪৩
শ্রীমার্কণ্ডেয় পুরাণে সাবর্ণিক মন্বন্তরে দেবীমাহাত্ম্যপ্রসঙ্গে 'নিশুম্ভবধ' নামক নবম অধ্যায় সম্পূর্ণ হল।। ৯ ৷৷